DurgapurUpdate

Durgapur Update 24 X 7 bengali news portal


Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

Thursday, July 28, 2022

হিমালয়ের তুষার নেকড়েদের রক্ষা করা স্থানীয় ইকো সিস্টেমের ভারসাম্য রক্ষায় জরুরি : ধৃতি বন্দ্যোপাধ্যায়

  


পিআই বি , কলকাতাঃ  মধ্য এশিয়ার  পার্বত্য অঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকায় তুষার নেকড়েদের বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে রয়েছে এবং তাদের বেঁচে থাকা মূলত নির্ভরশীল বন্য তৃণভোজী প্রাণীদের ওপরেই। যেসব প্রাকৃতিক সহজাত জিনিসের ওপরে নির্ভর করে তাদের খাদ্য-খাদকের সম্পর্ক সে সবের দ্রুত অবলুপ্তির কারনে এই আকর্ষণীয় প্রজাতির বেঁচে থাকা এখন সংশয়ের মুখে দাঁড়িয়েছে। অধিকন্তু পশম এবং হাড়ের অবৈধ চোরাচালানকে ঘিরে মানুষের হাতে তাদের জীবন দিতে হচ্ছে। প্রকৃতি সংরক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন আইইউসিএন এদেরকে সংকটাদীর্ণ আখ্যা দিয়ে লাল তালিকাভুক্ত করেছে এবং এদের রক্ষায় ভারতীয় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন ১৯৭২ (আইডাব্লুপিএ) এর শিডিউল ১-এর তালিকাভুক্ত করে সংরক্ষণে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে।

সমীক্ষায় দেখা গেছে হিমালয়ের পার্বত্য এলাকার লাদাখ, হিমাচলপ্রদেশ, উত্তরাখন্ড এবং সিকিমের বিভিন্ন এলাকায় তুষার নেকড়েদের ছড়িয়ে থাকার বিষয়ে ভারতে এক সমৃদ্ধ প্রাকৃতিক ইতিহাস রয়েছে। তবে এদের কার্যকরী সংরক্ষণ এবং ব্যবস্থাপক প্রকৌশল গ্রহণ করতে তুষার নেকড়েদের খাদ্য-খাদক সম্পর্কের ভূমিকা বোঝাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কলকাতার ভারতীয় প্রাণীবিদ্যা সর্বেক্ষণ (জেডএসআই) ন্যাশনাল মিশন অন হিমালয়ান স্টাডিজের অধীন পিনভ্যালি ন্যাশনাল পার্ক, কিপবার ওয়াইন্ড লাইফ রেঞ্জ এবং ট্যাবো ওয়াইন্ড লাইফ রেঞ্জ এবং হিমাচলপ্রদেশের স্পীতি উপত্যকায় তুষার নেকড়েদের গতি প্রকৃতি এবং তাদের খাদ্য (সাইবেরিয়ান ছাগল এবং নীল ভেড়া) চিহ্নিত করতে পেতে রাখা ক্যামেরা এবং সংকেতিক চিহ্নের ওপর ভিত্তি করে সমীক্ষা চালিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছে।

জেডএসআই-এর জীব বিজ্ঞানী শ্রীমতী আমিরা শারিফ উল্লেখ করেছেন তাদের প্রয়োজনীয় খাদ্য থাকা এবং না থাকা তাদের জীবনযাত্রাকে কিভাবে প্রভাবিত করে। জেডএসআই কলকাতার বন্যপ্রাণী বিভাগের প্রধান বিজ্ঞানী ডঃ ললিত কুমার শর্মা বলেছেন, স্পীতি উপত্যকার সংরক্ষিত এলাকা এবং তার বাইরে তুষার নেকড়েদের বসবাসের উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে এবং তাদের প্রয়োজনীয় খাদ্যও সেখানে রয়েছে। ডঃ শর্মা আরও বলেছেন, পার্বত্য এলাকার প্রায় ৩ হাজার ২০০ থেকে ৫ হাজার ২০০ মিটার উচ্চতায় যেখানে বনাঞ্চল নেই সেইসব রুক্ষ এলাকা তুষার নেকড়েদের বিচরণ ক্ষেত্র। তিনি উল্লেখ করেছেন যে ওই সাইবেরীয় ছাগল ও নীল ভেড়া থাকলে সেখানে তুষার নেকড়েদের বেশি করে দেখা যায়। সমীক্ষাতে আরও বলা হয়েছে তারা যদি সম্পূর্ণ স্বাধীন হতো তাহলে একত্রে আশাতীত কম দেখা পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। ফলে এই খাদ্য-খাদকের সম্পর্কের যোগসূত্র নির্ণয়ের মধ্যে দিয়ে তুষার নেকড়ে এবং তাদের খাদ্য নির্ভরশীলতার বিশ্লেষণের ভিত্তিতে তাদের জনসংখ্যার ঘনত্ব নির্ণয়ে দীর্ঘমেয়াদী তুলনা মূলক তথ্য বিশ্লেষণের প্রয়োজন আছে।

শ্রীমতী আমিরার বিশ্লেষণ অনুযায়ী উচ্চ পার্বত্য এলাকার শিকারী তুষার নেকড়েদের ওপরই নির্ভর করে তৃণভোজী নীল ভেড়া এবং সাইবেরীয় ছাগলের জনসংখ্যা। এর পাশাপাশি তৃণভূমির স্বাস্থ্যও এর ওপর নির্ভরশীল। তুষার নেকড়েদের দীর্ঘ অনুপস্থিতি দেখা দিলে পাহাড়ী ছাগল আর নীল ভেড়ার মতো তৃণভোজী প্রাণীর সংখ্যা বাড়বে। এর ফলে ঐসব অঞ্চলের তৃণাচ্ছাদিত এলাকা দ্রুত হ্রাস পেতে পারে। এর ফলে সামগ্রিকভাবে এক প্রাকৃতিক ভারসাম্যগত বিপর্যয় নেমে আসবে।

কলকাতায় জেডএসআই-এর অধিকর্তা ডঃ ধৃতি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, তুষার নেকড়েদের সংরক্ষণ সামগ্রিকভাবে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ। এসব শিকারী প্রাণীদের জন্য সংরক্ষিত এলাকা এবং তার বাইরের এলাকা সুনির্দিষ্টকরণ এদের সংরক্ষণ এবং ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে কার্যকরী হাতিয়ার হতে পারে। স্পীতি উপত্যকায় তুষার নেকড়েরা যাতে দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে সেজন্য আরও ভালো সংরক্ষণ ব্যবস্থা এবং প্রকৌশলের প্রয়োজন রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad

Your Ad Spot