দুর্গাপুর আপডেট নিউজ ডেস্ক : বারে বারে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায় মৃত্যুর মিছিল । প্রশ্ন উঠছে শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিয়ে আবারও কয়েকদিন আগে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বিস্ফোরণে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায় আহত হয় পাঁচ জন। সকলকেই দুর্গাপুরের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় আজ মৃত্যু হয় একজনের। ট্রেনি হিসেবে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায় যোগ দিয়েছিল এই যুবক ।
এস ধাঙ্গারের [ ২৪] মৃত্যু হল দুর্গাপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে । তিনি ট্রেড অ্যাপ্রেন্টিস ছিলেন । গত কয়েকদিন আগে দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার এস এম এস বিভাগে বিস্ফোরণ ঘটে আর সেই বিস্ফোরণের জেরে মোট পাঁচ জন গুরুতর আহত হন ।, একজন সিনিয়র ম্যানেজার , একজন সিনিয়র টেকনিশিয়ান , একজন ঠিকা কর্মী এবং দুই জন ট্রেড অ্যাপ্রেন্টিস গুরুতর আহত হন । আজ দুর্গাপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হল এই ট্রেড অ্যাপ্রেন্টিসের । আর এ নিয়ে ইস্পাত কারখানার শ্রমিক সংগঠনগুলি তাদের নিজেদের ক্ষোভ উগরে দিয়েছে ।
সর্ব ভারতীয় সিটু নেতা ললিত মিশ্র ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন “ কতৃপক্ষের গাফিলতিতে প্রাণ গেল এক ট্রেড অ্যাপ্রেন্টিসের । নিয়ম অনুসারে কতৃপক্ষ ট্রেড অ্যাপ্রেন্টিসদের জবে লাগাতে পারেন না কিন্তু নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কতৃপক্ষ এই ট্রেড অ্যাপ্রেন্টিসকে কাজে লাগানোর জন্যই প্রাণ খোয়াতে হল এই যুবককে । বারবার সিটুর পক্ষ থেকে কতৃপক্ষকে বলা হয়েছে ট্রেড অ্যাপ্রেন্টিসদের জবে লাগাবেন না কিন্তু কতৃপক্ষ সেই আবেদনকে আদৌ গুরুত্ব দেয় নি । স্থায়ী কর্মী নিয়োগ নেই , ঠিকা শ্রমিকদের সেভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া নেই , ট্রেড অ্যাপ্রেন্টিসদের জবে লাগানো এবং কর্মস্থলে শ্রমিকদের সেফটির বিষয়কে গুরুত্ব না দেওয়ার জন্য বারবার দুর্ঘটনা ঘটছে ।
তিনি বলেন দুর্ঘটনার তিনদিন আগে থেকেই লিকেজ হয় , সিটুর পক্ষ থেকে বারবার বলা হয় শাট ডাউন নিয়ে সারিয়ে তোলা হোক লিকেজ কিন্তু কতৃপক্ষ সেসব গুরুত্ব না দিয়ে প্রোডাকশন চালু রাখে আর যার জেরে এত বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে এবং আজ একজন মারা গিয়েছে । এই সর্বভারতীয় সিটু নেতা দাবী করেন তারা কতৃপক্ষের কাছে দাবী করেছেন যথাযথ আর্থিক ক্ষতিপূরণ , একজনকে চাকরি , দ্রুত সেফটির বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া , ট্রেড অ্যাপ্রেন্টিসদের সরসারি জবে লাগিয়ে দেওয়া বন্ধ করা এবং স্থায়ী কর্মী নিয়োগ করার ।
এতকিছু হওয়ার পরেও তার দুদিন পরেও আবারও একটি ঘটনা ঘটে , দুর্গাপুরের মিশ্র ইস্পাত কারখানায় আহত হন গলিত লোহায় একজন শ্রমিক। তিনিও ভর্তি একই বেসরকারি হাসপাতালে । তৃণমুল জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বলেন “ আর্থিক ক্ষতিপূরণ , একজনকে চাকরি দেওয়ার দাবী জানাচ্ছেন তারা”।
তৃণমূল আই এন টি টি ইউ সি জেলা সভাপতি অভিজিৎ ঘটক বলেন কতৃপক্ষকে বারবার আই এন টি টি ইউ সি বলছে সেফটির উপরে জোর দিতে কিন্তু কতৃপক্ষ গুরুত্ব দেয় নি । আজ প্রাণ গেল একজনের । দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে তারা বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন । আগেই জানা গিয়েছিল সমস্যা আছে কিন্তু লিকেজকে গুরুত্ব না দেওয়াতেই দুর্ঘটনা এরজন্য কতৃপক্ষের গাফিলতি দায়ী বলছেন শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্বরা । দুর্ঘটনার জেরে দুই ইস্পাত আধিকারিক সাসপেন্ড হয়েছেন । এখনো মোট পাঁচজন ভর্তি মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন । প্রশ্ন অনেক ইস্পাত কারখানার কর্মী সহ শ্রমিক এবং বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্বদের মধ্যে । আদৌ কোন উত্তর কি মিলবে? মিলবে কি শ্রমিকদের নিরাপত্তা ? থামবে কি মৃত্যুর মিছিল ? উত্তর দেবে সময় ।
No comments:
Post a Comment