আবারও কারখানায় শ্রমিক নেতার বিরুদ্ধে পোস্টার পড়াকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ালো শহরে। অস্বস্তিতে শাসক দলের শ্রমিক সংগঠন। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ তুলে সরব বিরোধীরা।
তুলকালাম রাজনৈতিক মহল। সূত্র মারফত খবর, বুধবার সকালে দুর্গাপুর প্রজেক্ট লিমিটেড (ডিপিএল) ও দুর্গাপুর মিশ্র ইস্পাত (এএসপি) কারখানার প্রশাসনিক ভবনের সামনে তৃণমূল শ্রমিক নেতার বিরুদ্ধে পোস্টার পড়ে। পোস্টারে ডিপিএলের আইএনটিটিইউসি'র প্রাক্তন সম্পাদক উজ্জ্বল দাস এবং বিজেপির সাথে তার ঘনিষ্ঠতা, শ্রমিক স্বার্থের পরিবর্তে ব্যক্তিগতস্বার্থ চরিতার্থতার নানা অভিযোগ তুলে পোস্টার পড়ে।
অন্যদিকে এএসপিতে পোস্টার পড়ে পৌর প্রশাসক মন্ডলীর সদস্য দীপঙ্কর লাহার নামে। সেই পোস্টারে বোল্ডার আর কয়লা মাফিয়াদের সাথে দীপঙ্কর লাহার সংযোগেরও ছবি দেওয়া হয়। ছবিতে এক বোল্ডার ও কয়লা মাফিয়ার হাতে এএসপি'র গেট পাস তুলে দেওয়ার ছবি দেওয়া হয় পোস্টারে।
খবর চাউর হতেই ব্যাপক শোরগোল পড়ে যায় শহরে। শুরু হয় রাজনৈতিক তরজা। যদিও সাফাই দিয়ে দীপঙ্কর লাহা জানান, "এ বিষয়ে কারো প্রতি কোন সন্দেহ নেই। ছমাস আগেও একই ধরনের পোস্টার পড়েছিল তারই পুনরাবৃত্তি ঘটেছে এবার।" অন্যদিকে ডিপিএল'র শ্রমিক নেতা আলোময় ঘড়ুই বলেন, "এটি রাম-বামের চক্রান্ত, কারণ তাদের পায়ের তলায় মাটি সরে গেছে।
পোস্টারের বিষয়ে উচ্চতর নেতৃত্ব ব্যবস্থা নেবে।" এর বিরোধিতায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ তুলে বিজেপি নেতা চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "লোহা চুরি, কয়লা চুরি, বোল্ডার চুরি, বালি চুরি সবেতেই তৃণমূল জড়িত। যতই দিদিকে বলো, এক ডাকে অভিষেক আবার বর্তমানে ঋতব্রত বন্দোপাধ্যায়ের হেল্পলাইন নম্বর, পোর্টালের মাধ্যমে কর্মে নিযুক্তি আসুক, কোনটাই কাজের নয় কারণ এখান থেকে তোলা তুলে প্রতি মাসে মোটা টাকা ভাইপোকে পাঠাতে হয়।
যারা জেলা প্রেসিডেন্ট তারাই হচ্ছে মূল সিন্ডিকেটের মাথা। আর পোস্টার পড়া দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফলাফল। মলয় ঘটক, বিশ্বনাথ পাড়িয়াল ও প্রভাত চ্যাটার্জী এই তিন গোষ্ঠীর লোকের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।" অবশ্য এ প্রসঙ্গে আইএনটিটিইউসি'র রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "কে পোস্টার ফেলেছে, কার বিরুদ্ধে পোস্টার সবটাই খতিয়ে দেখা হবে। পুলিশ প্রশাসন তদন্ত করে সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।"
বলাই বাহুল্য একদিকে মোটা টাকার বিনিময়ে বেআইনিভাবে কারখানায় বহিরাগতদের কর্মে নিযুক্তির অভিযোগ আর অন্যদিকে দলেরই অন্তর্দ্বন্দ্বের ফলে পোষ্টার, স্বভাবতই এই ঘটনায় সাময়িক অস্বস্তিতে পড়েছে শাসক দলের শ্রমিক সংগঠন।
No comments:
Post a Comment